সফলতা অবশ্যই আকর্ষণীয় কিন্তু এই যাত্রার চারদিকে বিপত্তিতে ভরা। এই পথচলায় অনেকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়, সাফল্য তখন অধরাই থেকে যায়। জীবনে সফল হতে হলে সেইসব বাধা-বিপত্তি পার হয়ে যেতে জানতে হবে। আমাদের নিজের কিছু স্বভাবই আমাদের সফল হতে দেয় না। আমরা তা বুঝতেও পারি না, অলক্ষ্যেই নিজের ভেতরে লালন করে চলি। দিনশেষে ভাবি, আমাদের কী দোষ, কেন আমরা ব্যর্থ! আপনার জীবনেও বারবার কেবল ব্যর্থতাই ধরা দিচ্ছে? মিলিয়ে নিন তো এই স্বভাবগুলো আপনার ভেতরে রয়েছে কি না-
১. পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করা
বেশিরভাগ ব্যর্থ মানুষের এই স্বভাব থাকে। তাদের স্বপ্নগুলো চিন্তা হিসেবেই স্থির থাকে। তারা স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে ভয় পায়। বড় স্বপ্নের জন্য প্রয়োজন হয় বড় সাহসের, অনেক বেশি মনোবলের। যা বেশিরভাগেরই থাকে না। পরিকল্পনা শুরু করার জন্য সাহস, সংকল্প এবং কঠিন কাজগুলোকে ছোট ও পরিচালনাযোগ্য করার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। ব্যর্থতা আসে আপনার অনিচ্ছা থেকেই।
২. ধারাবাহিকতা না থাকা
কোনোকিছুতে সফল হওয়ার জন্য ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। ধারাবাহিকতা না থাকলে একটা সময় সেই কাজের প্রেরণা কমে যায়। ধারাবাহিকতা মানে কেবল একই কাজ নিয়মিত করতে থাকাই নয়, এটি আপনার শৃঙ্খলা, একাগ্রতাও প্রকাশ করে। যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে দৃঢ়তা এবং অধ্যবসায়, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অবিরাম এগিয়ে যাওয়া, কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের কাছাকাছি যাওয়ার সংকল্প থাকতে হবে।
৩. ব্যর্থতার ভয়
ভয় একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, এটি বেশিরভাগ সময়ে সাফল্যের সম্ভাবনার চেয়ে বড় হয়। ব্যর্থতার ভয় আঁকড়ে ধরে আপনার প্রচেষ্টাকে পঙ্গু করে দেয়। কিন্তু ব্যর্থতা মানেই সবকিছু শেষ নয়। বরং এটি আপনার জন্য একটি নতুন শিক্ষা নিয়ে আসে। আপনি সেখান থেকেই আবার শুরু করতে পারেন, যেখান থেকে থেমে গিয়েছিলেন। ভয় কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থতাকে জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে গ্রহণ করুন।
৪. লক্ষ্য না থাকা
লক্ষ্য ছাড়া জীবন একটি কম্পাস ছাড়া পাল ছাড়া নৌকার মতো। আপনার যখন কোনো লক্ষ্য থাকবে না তখন সফলতা আর ব্যর্থতা দুই-ই আপনার জন্য সমান। তাই সবার আগে জীবনের লক্ষ্য নির্দিষ্ট করুন। আপনি কোথায় আছেন এবং কোথায় যেতে চান তা চিন্তা করুন। এটি ঠিক যে মানুষের পরিকল্পনা অনুসারেই সবকিছু হয় না। কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কী! আপনি যখন লক্ষ্য ঠিক রেখে এগিয়ে যাবেন, তখন শতভাগ না হলেও সন্তুষ্টিজনক সফলতা জীবনে আসবেই।
৫. নিজের প্রতি বিশ্বাসের অভাব
আত্মবিশ্বাস সাফল্যের স্প্রিংবোর্ড হিসেবে কাজ করে। তবুও অনেকে আত্ম-সন্দেহে ভোগেন। এটি তাদের সম্ভাবনাকে সীমিত করে দেয়। আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য নিজের শক্তিকে স্বীকার, আত্ম-সহানুভূতি লালন এবং ইতিবাচক ইমেজ গড়ে তুলতে হবে। অপূর্ণতা এবং ব্যর্থতাকে ধাপে ধাপে আলিঙ্গন করতে জানতে হবে, যা আপনাকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সাহস জোগাবে।
৬. দেরি করা
কেবল সময়ের কাজ সময়ে না করার কারণে অনেকেই জীবনে মুখ থুবড়ে পড়ে। এই ব্যর্থতা অনেক সময় সারাজীবনেও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। কারণ সবকিছু ফিরিয়ে আনা গেলেও সময় কখনো ফিরিয়ে আনা যায় না। আপনার কাজগুলোকে বোঝা হিসেবে না দেখে ছোট ছোট ভাগ করে সম্পাদন করুন। যে কাজ করতেই হবে তা আনন্দ নিয়ে করুন। এতে কাজের মান ভালো হবে আবার আপনার সফলতার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
Collected From dhakapost