প্রথম ধাপের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সাধারণ বিষয়গুলো (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার) থেকে ৪০ শতাংশ প্রশ্ন হয়। মে মাস হিসেবে ধরে ১৭শ বিজেএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সময় বেশি নেই। নতুন প্রার্থীদের জন্য অল্প সময়ে সাধারণ বিষয়গুলোর প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি বই পড়া সম্ভব হবে না। এ ক্ষেত্রে ১০ম-৪৫তম বিসিএস প্রশ্ন (সাধারণ অংশ) এবং ৩য়-১৬শ বিজেএসের প্রিলিমিনারি প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে এবং এখান থেকেই ৪০ নম্বরের মধ্যে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ নম্বর ওঠানো সম্ভব।
বিগত প্রশ্নপত্রের বাইরে কিছু পড়তে চাইলে দৈনিক পত্রিকা এবং বিসিএস প্রিলিমিনারির বিষয়ভিত্তিক একটি বইয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বিজেএস প্রিলিমিনারিতে সাধারণত গণিতে ৫, বিজ্ঞান কম্পিউটারে ৫, সাধারণ জ্ঞানে ১০, বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে ২০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে।
♦ প্রিলিমিনারিতে সাধারণত আইনসংক্রান্ত বিষয় থেকে ৬০ নম্বর প্রশ্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন করা হয় সাংবিধানিক আইন থেকে।
এ ছাড়া সিআরপিসি, পেনাল কোড, সিপিসি, পারিবারিক আইন, সম্পত্তিসংক্রান্ত আইন, বিশেষ আইনগুলো থেকে বেশি প্রশ্ন এসে থাকে। আইনের প্রস্তুতির জন্য সর্বাগ্রে মূল আইনটি ভালো করে পড়া প্রয়োজন। কিছু আইনগত শব্দের বাংলা একটু খটমট লাগলেও মাতৃভাষায় আইন পড়লে বেশি আত্মস্থ করা সম্ভব। প্রিলিমিনারির জন্য মূল আইনের সঙ্গে মিলিয়ে দু-একটি সহায়ক বই পড়া যেতে পারে।
মানসম্মত দুটি বই এবং ৩য়-১৬শ বিজেএসের প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো সমাধান করলে প্রশ্নপত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। বিজেএস প্রিলিমিনারিতে সাধারণত ৫০ পেলেই পাস করা যায়। গত ১৩টি বিজেএসে কাট মার্ক কখনোই ৫০-এর ওপরে ওঠেনি।
♦ বিজেএস পরীক্ষার দ্বিতীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ১০০০ নম্বরের (১০টি বিষয়ের প্রতিটির ওপর ১০০ নম্বর) লিখিত পরীক্ষা। প্রস্তুতির শুরু করতে হবে বিগত বিজেএসগুলোর লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে করে।
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়গুলো আগের বছরগুলোতে বারবার এসেছে, সে বিষয়গুলো বেশি জোর দিয়ে পড়া উচিত। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি প্রতিটিতে ৪০ করে মোট ৮০ নম্বর ব্যাকরণ ও সাহিত্যসংক্রান্ত প্রশ্ন আসে। প্রস্তুতি যথাযথ হলে এ অংশে পুরো নম্বরই তোলা সম্ভব। সাহিত্যের জন্য বিসিএস প্রিলিমিনারির বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের একটি করে বই এবং ব্যাকরণ অংশের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ব্যাকরণ বই সহায়ক হবে। বাংলা ও ইংরেজির বাকি ১২০ নম্বর রচনামূলক। এ অংশের জন্য কোনো কিছু মুখস্থ না করে রচনা, আবেদনপত্র, ভাবসম্প্রসারণ প্রভৃতির ফরম্যাট দেখে রাখা যেতে পারে। এর সঙ্গে তথ্য-উপাত্তের জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়া ভালো ফল দেবে।
লিখিত পরীক্ষার বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির (১০০ নম্বর) জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়াটাই যথেষ্ট।
গণিতে (৫০ নম্বর) ভালো করতে লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস দেখে সংশ্লিষ্ট অধ্যায়গুলো যেকোনো ভালো প্রকাশনীর বিসিএস লিখিত পরীক্ষার গণিত বই অনুসরণ করা যেতে পারে। জ্যামিতি অংশের জন্য ত্রিভুজ ও বৃত্তসংক্রান্ত উপপাদ্যগুলো দেখা যেতে পারে। বিজ্ঞান ও কম্পিউটার অংশে ২৫টি ২ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এখানে কোনো বিকল্প থাকে না। এ অংশের জন্য অষ্টম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই এবং বিসিএস প্রিলিমিনারির বিজ্ঞান ও কম্পিউটারের একটি করে বই পড়লে ভালো নম্বর ওঠানো সম্ভব।
আইনের ৬০০ নম্বরের মধ্যে কেবল মুসলিম আইনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত অঙ্কের ২০ এবং হিন্দু আইনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত অঙ্কের ১০ নম্বর—এই ৩০ নম্বরে পূর্ণ নম্বর তোলা সম্ভব। আইনের অবশিষ্ট ৫৭০ নম্বরে পূর্ণ নম্বর তোলার সুযোগ নেই, কিন্তু যত বেশি সম্ভব নম্বর তুলতে হলে প্রথমত আগের বিজেএস প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে বারবার আসা টপিকগুলোতে জোর দিতে হবে। মূল আইনগুলো কদাচিৎ পরিবর্তন হয়। ফলে দেখা যায়, এসব আইনের কিছু নির্দিষ্ট বিষয় থেকেই বারবার লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে। দ্বিতীয়ত, মূল আইনগুলো ভালো করে পড়তে হবে। তৃতীয়ত, যে বিষয়গুলোর উত্তর সরাসরি মূল আইনে পাওয়া যাবে না কেবল সেগুলো পড়ার জন্য কোনো ভালো বইয়ের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তবে আইন অংশে বেশি নম্বর তুলতে চাইলে মূল আইন পড়ার কোনো বিকল্প নেই। লিখিত পরীক্ষায় ঐচ্ছিক আইনসংক্রান্ত যে দুটি বিকল্প আছে, সেখান থেকে পুরনো আইনগুলো বাছাই করা উচিত। কারণ পুরনো আইন বাছাই করলে আগের বছরের প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সহজতর হবে।
♦ লিখিত পরীক্ষার ১০০০ নম্বরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলা-ইংরেজি ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশের ৮০, গণিত-বিজ্ঞানের ১০০, হিন্দু-মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের ৩০ অর্থাৎ ২১০ নম্বরে ২১০ নম্বরই তোলা সম্ভব। সুতরাং এই অংশে গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে যত বেশি নম্বর তোলা যাবে, বিচারক হওয়ার দৌড়ে তত এগিয়ে থাকা যাবে।
♦ বিজেএস পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে আছে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষায় আইনের মৌলিক বিষয়গুলো ছাড়াও প্রার্থীর নিজের সম্পর্কে, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয়-আন্তর্জাতিক সমসাময়িক বিষয়, নিজ জেলা, জাতীয় ইতিহাস সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হয়।
Collected From kalerkantho