পাহাড়ী কোমর তাঁতেই জুয়ামতিং বমের দিন বদল
16/11/2022
1024 Views
বান্দরবান শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র পাহাড়ী প্রাকৃতির ঝর্ণা “শৈলপ্রতাপ”। এই প্রাকৃতিক ঝর্ণাকে ঘিরে আছে কয়েকটি পাহাড়ী জনপদ। যার একটি ফারুকপাড়া। শৈলপ্রপাত পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে ফারুকপাড়াসহ আশেপাশের জনগোষ্ঠী নিজস্ব ডিজাইনের বস্ত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহের উপায় খুঁজে পেয়েছে। শৈলপ্রপাতের আশেপাশে গড়ে উঠেছে পাহাড়ীদের নিজস্ব নজরকাড়া ডিজাইনের তৈরী করা বস্ত্রের দোকান।
ফারুকপাড়ার অধিবাসী খলখুপ বম এর সাথে ১৯৯০ সনে বিয়ে হয় দরিদ্র পরিবারের মেয়ে জুয়ামতিং বমের। স্বামীর আর্থিক অবস্থাও ভাল ছিল না। এদিকে নতুন মুখের আগমনের ফলে সংসার আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। জুয়ামতিং এর কিছু একটা করার ইচ্ছা থাকলেও পুঁজি বড় সমস্যা হয়ে দাড়াঁয়। বিআরডিবি’র সমিতির মাধ্যমে আর্থিক উন্নতির কথা লোক মুখে শুনে একদিন পাড়ার কয়েকজনকে নিয়ে বিআরডিবি অফিসে যান। বিআরডিবি বান্দরবান সদর উপজেলার কর্মকর্তাদের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে পাবর্ত্য চট্টগ্রম সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০০৩ সালে “ফারুকপাড়া সমাজ উন্নয়ন মহিলা দল” নামে একটি দল গঠন করেন। জুয়ামতিং দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প হতে মাত্র ৫% সার্ভিস ফি’তে ২,০০০/- টাকা ঋণ গ্রহন করেন। ঋণের টাকা দিয়ে বাজার থেকে উল কিনে পাহাড়ী কোমর তাতেঁর মাধ্যমে উলের চাদর, মাফলার, কম্বল,পাপোঁশ, টেবিল ম্যাট প্রভৃতি বানানো শুরু করেন। তৈরিকৃত বস্ত্রসমগ্রী পাইকারী দরে শৈলপ্রপাত এলাকার দোকানগুলোতে সরবরাহ করেন। প্রথম দিকে প্রতি মাসে ১,০০০/- টাকা আয় হতো। তিনি এ পর্যন্ত দশ দফায় ১,১৯,০০০/- টাকা ঋণ নিয়েছেন। তিনি এখন মাসে গড়ে ৮,০০০/- টাকা থেকে ১০,০০০/- টাকা আয় করেন। জুয়ামতিং বম কোমর তাতিঁর বোনা বস্ত্রসামগ্রী বিক্রয় করে আয়ের টাকা হতে ঋণ পরিশোধ ও সঞ্চয় জমার পাশাপাশি সন্তাদের লেখাপড়া ও স্বামীকে কৃষি কাজে সহযোগীতা করেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে আমের বাগান করেছেন। তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থার জন্য বিআরডিবি’র অবদানের কথা সবসময় কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন।
Collected from brdb