ক্যারিয়ারের ১০ মন্ত্র
08/03/2023
981 Views
ভালো একটি ক্যারিয়ারের স্বপ্ন থাকে সবারই। কিন্তু ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে অনেক বিষয়কেই মাথায় রাখতে হয়। অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক পরিস্থিতিও হঠাত্ করে বদলে দিতে পারে দৃশ্যপট। আবার শুরু থেকেই নিতে হবে যথার্ত প্রস্তুতি। ক্যারিয়ারের জন্য অত্যাবশ্যক ১০টি টিপস নিয়ে এই লেখাটি লিখেছেন আফিরিন জাহান ১. ইতিবাচক মনোভাব আমরা সবাই জানি নেতিবাচকের চেয়ে ইতিবাচক কর্মকাণ্ড ও মনোভাব সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়তেও ইতিবাচক মনোভাবের বিকল্প নেই। সত্যিকার অর্থে প্রতিটি কাজেই ইতিবাচক কাজের প্রাধান্য বেশি। আমি অথবা আপনি এটা ভালো করেই জানি ‘উপদেশ দেওয়া সহজ তবে পালন করাটাই কঠিন’। সেইসাথে আমরা এটাও জানি ইতিবাচক অবস্থান একজন মানুষকে কোলাহল, উত্তেজনা উগ্রতা, দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখে। আপনি যখন মনের দিক থেকে সত্ থাকবেন, তখন আপনাআপনি মন প্রফুল্ল থাকবে। নিজের সাথে বোঝাপড়াটাও ভালো হবে। মনকে প্রফুল্ল রাখতে পারলে স্বপ্নের চাকরিই শুধু নয়, যেকোনো কাজেই সাফল্য লাভ করা সম্ভব হয়। ২. নিজেকে জানুন হরহামেশাই দেখা যায় ভালো বেতনের চাকরিকে সবাই প্রাধান্য দেয়। আবার বেশি বেতনের চাকরি করলে সমাজেও কদরটা একটু বেশি। তাই সকলেই ঝুঁকে পড়ে বেশি বেতনের চাকরির দিকে। তবে এক্ষেত্রে কেবল বেতন মাথায় না রেখে নিজের আকাঙ্ক্ষা ও ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। আত্পনি কোন পেশার জন্য উপযোগী, কোন পেশায় ভালো করবেন, এসব বিষয় মাথায় রেখেই পেশা নির্বাচনে মনোযোগী হোন। আর সে জন্য দরকার নিজেকে জানা। নিজের উপর যতটা নির্ভরশীল হওয়া যাবে, সাফল্যের পথে সে ততটাই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। ৩. চাহিদা ও দক্ষতা নির্ধারণ প্রত্যেকেরই উচিত অবসর সময়টাতে নিজেকে তৈরি করা। কারণ আপনি হয়ত এমন কোনো চাকরি করতে চান, যার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা আপনার নেই। তাই অবসর সময়ে এসব বিষয় খুঁজে নিয়ে চর্চা করতে হবে। মূলত শিক্ষাজীবন থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠতে পারলে লাভ বেশি। কারণ আপনি শিক্ষা শেষ করেই যখন চাকরির জন্য আবেদন করবেন, তখন ওই চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় অনেক দক্ষতাই তখন আপনার দখলে। ফলে প্রার্থীতার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবেন আপনি। ৪. ব্যক্তিত্ব নিরূপণ দক্ষতা ও আগ্রহ উভয়ই আছে। এবার আপনার উচিত নিজেকে কতটা সফল দেখতে চান আপনার কর্মক্ষেত্রে, সেটা জেনে নেওয়া। সেজন্য ব্যক্তিত্ব নিরূপণ করার দায়িত্বও আপনারই। বর্তমানে ইন্টারনেটে ব্যক্তিত্ব যাচাইয়ের জন্য নানা ধরনের পরীক্ষায় বিনামূল্যেই অংশগ্রহণ করা যায়। এর মধ্যে মায়ারস ব্রিগস টাইপ ইন্ডিকেটর (এমবিটিআই) সর্বসমাদৃত। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার ব্যত্তিত্ব এবং চারিত্রিক দৃঢ়তা নিরূপণ করে নিতে পারেন। ৫. নমনীয়তা উগ্রতা সর্বদাই খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কোনো কাজই জোরপূর্বক করে নেওয়া যায় না। আর জোরপূর্বক করে নেওয়া হলেও পরিবর্তিতে তার কুফল ভোগ করতেই হয়। তাই উগ্রতা নয়, নমনীয়তায় জীবন গড়াটাই বেশি যৌক্তিক। ৬. পরামর্শ গ্রহণ অনেক সময়ই আমরা নিজেরাই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকি কোনটা ভালো, কোনটা ঠিক হবে সেগুলো নির্ধারণ করতে। এসব ক্ষেত্রে নিজের পাশাপাশি কাছের মানুষগুলোর পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণও করতে পারেন। ৭. সময় সচেতনতা প্রতিটি মানুষেরই উচিত সময়কে সঠিক ব্যবহার করা। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারলে যেকোনো কাজেই সফলতা পাওয়া যায়। অযথা সময়ক্ষেপণকারীকে প্রয়োজনীয় সময় এসে উঠতে হয়। এতে কাজে ভুলও হয়। পরে কো বলে ফেলে রাখলে কোনো কাজই হয়ে ওঠে না। সময়ের প্রতি সচেতনতাই তাই সফল ক্যারিয়ারের অন্যতম একটি নিয়ামক। ৮. নেটওয়ার্ক তৈরি সফল ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে অবশ্যই একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। তবে নেটওয়ার্কটি অবশ্যই সত্ ও উদ্দেশ্যবহুল হওয়া চাই। নানাজনের সাথে কথা বলে ও বন্ধুত্ব করাটাও সফল ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করতে পারবে। সময় সঠিক পরামর্শের মাধ্যমে সহায়তা করবে, যা ক্যারিয়ারে সফল হতে সহায়ক হবে। ৯. ক্যারিয়ার জিজ্ঞাসা আপনি যদি আপনার কর্মক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন তবে কিন্তু মহা সমস্যার সম্মুখীন হবেন। আপনার তখন সম্ভব হবে না স্কুলে ফিরে গিয়ে নতুনভাবে পড়াশোনা করে অন্যক্ষেত্রে সফল হওয়ার। তাই আপনার উচিত আগে থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। আপনি নিজেই ক্যারিয়ার জিজ্ঞাসার মাধ্যমে আপনার নানা সমস্যার সমাধান করে নিতে পারেন। নতুন নতুন সব আইডিয়া তৈরি করে তার উপর পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমেও ক্যারিয়ারে সফলতা পাওয়া সম্ভব। ১০. সহিষ্ণুতা প্রবাদ আছে, ‘ভালো জিনিস একটু দেরিতেই আসে’। কোনো কাজেই তাড়াহুড়া করাটা ভালো লক্ষণ নয়। হুটহাট কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ধৈর্যশীল হোন। যতটাসম্ভব ধৈর্য নিয়ে সব কাজকে এগিয়ে নিন, নিজেকে এগিয়ে নিন।
Collected from ittefaq