দেশের বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজের মতো এবার মাদ্রাসায় শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠানে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (শারীরিক শিক্ষা) হিসেবে শুধু নারীরাই নিয়োগ পাবেন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও সংক্রান্ত তিনটি নীতিমালার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান ও সংশোধন করে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে। নীতিমালায় সামঞ্জস্য আনতে সম্প্রতি বৈঠক হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) শাহনওয়াজ দিলরুবা খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মিটিংয়ে চূড়ান্ত হবে, রেজুলেশন হবে। এরপর মন্ত্রীর কাছে যাবে, তারপর আদেশ জারি হলে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।’
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নীতিমালায় সামঞ্জস্য আনতে বৈঠক হয়েছে। নীতিমালার অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও একটি কর্মশালা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা প্রয়োজন। নারী শিক্ষার্থীরা নারীদের সঙ্গে কমফোর্ট ফিল করে, সে কারণে নারীদের রাখার কথা বলা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয় দেশের নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বশেষ নীতিমালা হচ্ছে ‘২০২১ সালের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা।’
মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত মাদ্রাসার নীতিমালা হচ্ছে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’ এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (কারিগরি) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)’।
এই তিনটি নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা, এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রসহ নানা বিষয়ে ভিন্নতা রয়েছে। ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশে জটিলতায় পড়ে। এমপিওভুক্তি নিয়েও বিভিন্ন কথা ওঠে। এসব জটিলতা নিরসনে তিনটি নীতিমালায় সামঞ্জস্য আনার পদক্ষেপ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বেসরকারি স্কুল কলেজের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় শুধু নারী প্রার্থী। অপরদিকে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়োগ নেওয়া হয়।
এ ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য আনতে বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজের মতো দেশের মহিলা মাদ্রাসা ও মহিলা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে শুধু নারী প্রার্থী নিয়োগ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে গত ২৫ জুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ উপস্থিতি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ তিন অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে একটি কর্মশালা করে। মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে আদেশ জারির মাধ্যমে নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে শুধু নারীরাই নিয়োগ পাবেন।
Collected From Banglatribune