Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
বিদেশ যাওয়ার লোকগোছানো ‘দালালদের’ স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি

বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কর্মী সংগ্রহ করেন মধ্যস্থতাকারীরা। স্থানীয়ভাবে তাঁরা ‘দালাল’ নামেই বেশি পরিচিত। কিন্তু এই পরিচয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না তাঁরা। এ জন্য তারা আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু এই স্বীকৃতি সরকার নাকি রিক্রুটিং এজেন্সি দেবে, তা নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে।

সোমবার বিকেলে সংসদ ভবনসংলগ্ন পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। ‘এনসিউরিং এথিক্যাল রিক্রুটমেন্ট: রেগুলেশন অব মিডলম্যান’ শীর্ষক বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজন করে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু), অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাস, পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস, হেলভেটাস বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড দূতাবাস।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রামরুর চেয়ারপারসন তাসনীম সিদ্দিকী। তিনি মনে করেন, স্বীকৃতির জন্য মধ্যস্থতাকারীদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য তিনটি পদ্ধতি তুলে ধরেন তিনি। তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কাছে রিক্রুটিং এজেন্সি মধ্যস্থতাকারীদের নাম পাঠাবে। এরপর বিএমইটি মধ্যস্থতাকারীদের পরিচয়পত্র (আইডি) দেবে। অথবা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) জেলা পর্যায়ে কার্যালয় খুলে মধ্যস্থতাকারীদের কাগজ জমা দেবে বিএমইটির কাছে। তারপর বিএমইটি তাদের আইডি দেবে। এভাবে মধ্যস্থতাকারীদের বন্ধনের আওতায় আনা গেলে এজেন্সি ও মধ্যস্থতাকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনা যাবে।

অনুষ্ঠানে মো. মোস্তফা নামের এক মধ্যস্থতাকারী বলেন, ‘আমাদের কোনো পরিচয় নেই। লোকজন এলাকায় আমাদের দালাল বলে।’ এ সময় তাঁদের একটি পরিচয় দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

মধ্যস্থতাকারীদের নিরাপত্তা নেই। পুলিশ তাদের নানাভাবে হয়রানি করে বলে অভিযোগ করেন মো. মফিজ নামে এক মধ্যস্থতাকারী।

মধ্যস্থতাকারীদের স্বীকৃতির বিষয়ে কথা বলেন রামরুর নির্বাহী পরিচালক সি আর আবরার। তিনি বলেন, এই ইস্যু এতদিন অবহেলিত ছিল। এটাকে এভাবে ফেলে রাখা ঠিক হবে না।

তবে স্বীকৃতির বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিএমইটির মহাপরিচালক মো.শহীদুল আলম। তিনি বলেন, মধ্যস্থতাকারীরা ভুল তথ্য দেয়। বিদেশে যার বেতন ২০ হাজার টাকা সেটা বাড়িয়ে তারা ৮০ হাজার টাকা বলেন। গরিব ঠকানোর জন্য যে বিশাল একটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে, সে মানুষগুলোকে কেন স্বীকৃতি দেওয়া হবে?

বিএমইটির মহাপরিচালক আরও বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো তাদের (মধ্যস্থতাকারীদের) নিয়োগ দিক। এজেন্সিগুলো জেলা পর্যায়ে অফিস খুলে তাদের জেলা ব্যবস্থাপক বানিয়ে দিক। তারা কাজ করলে এজেন্সিগুলো কমিশন দেবে। তাহলে স্বীকৃতিও মিলবে, অনিয়মও কম হবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বাংলাদেশ সংসদীয় ককাসের নির্বাহী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের নিয়মের মধ্যে আনলে ১ শতাংশ হলেও অনিয়ম কম হবে। তারপরও আইন হচ্ছে না। কারণ, তারা বেশি টাকা নিয়ে কর্মীদের বিদেশে পাঠাবেন।

সাবেক সংসদ সদস্য রোকসানা ইয়াসমিন বলেন, দালালরা বিদেশগামীদের মিথ্যা কথা বলেন। এ জন্য যেসব মধ্যস্থতাকারী ভালো, তাঁদের স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু যাঁরা খারাপ কিংবা মিথ্যা বলবেন, তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন, আদিবা আঞ্জুম, মো. সানোয়ার হোসেন, রওশন আরা, বিএমইটির অতিরিক্ত সচিব মো. শহিদুল আলম, এনএস ইন্টারন্যাশনালের আলী হায়দার চৌধুরী, ডব্লিউএআরবিইর চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক, বিওএমএসএর সাধারণ সম্পাদক শেখ রুমানা, ওকেইউপির চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম প্রমুখ।

Collected from Prothom alo



Do you Need Any Help?