শীত এলেই বাড়ে নানা ধরনের সংক্রমণ। বিশেষ করে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বেড়ে যায় এ সময়। এ বছর শীতে আবার নতুন করে হানা দিয়েছে কোভিড। গত কয়েক দিনে কোভিড সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
নানা ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক কিংবা পরজীবী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের শরীরের রয়েছে নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা। দেহে কোনো জীবাণু প্রবেশ করলেই এরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। রোগপ্রতিরোধী কোষগুলো বহিরাগত জীবাণুকে ঘিরে ফেলে এবং আটকে ফেলে, তারপর জীবাণুর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে।
এই যুদ্ধে কখনো কখনো জীবাণুরাও কিন্তু জয়লাভ করে। তখন এরা দেহের বিভিন্ন কোষ ও অঙ্গকে আক্রমণ করে বসে। বংশবিস্তার করতে থাকে এবং দেহের বিভিন্ন ব্যবস্থাকে কাবু করে ফেলে। প্রকাশ পায় বিভিন্ন রোগের লক্ষণ। তাই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় ফাটল ধরলেই বিপদ। নানা রকম সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে তাই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। এ জন্য কতগুলো বিষয়ের ওপর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
নিয়মিত শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা মজবুত করবে। শরীরচর্চা করলে রক্তপ্রবাহ সচল থাকে। মন থাকে ফুরফুরে, উদ্বিগ্নতা কেটে যায়, নিদ্রা হয় সুখকর। ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের মতো রোগও নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
খাদ্য: ভিটামিন-এ, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম ও জিংক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসব ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ খাবার থাকা জরুরি। ভিটামিন বি-৬-এর অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে সবুজ শাকসবজি, আলু, কলা, মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের বাদাম, সূর্যমুখী তেল, অ্যাভোকাডো, আম প্রভৃতি খাবারে রয়েছে ভিটামিন-ই। টাটকা টকজাতীয় ফল যেমন কমলা, আঙুর, পেয়ারা, আমলকী, স্ট্রবেরি ভিটামিন-সিতে ঠাসা।
নিদ্রা: নিদ্রার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের সম্পর্ক গভীর। যারা ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান, তাঁরা ফ্লুতে আক্রান্ত হন বেশি। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা, কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা আর শিশুদের দরকার ১৪ ঘণ্টা ঘুম।
টিকা: সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঢাল হলো টিকা। সময়মতো বিভিন্ন টিকা নিলে মুক্ত থাকা যাবে অসংখ্য রোগ থেকে।
ধূমপান বর্জন: ধূমপান রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলে। এতে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। ধূমপানের ফলে উৎপন্ন নিকোটিন, ফর্মালডিহাইড, অ্যামোনিয়া, কার্বন মনোক্সাইড, টার, এসিটোন ইত্যাদি যৌগ জীবাণুর বিরুদ্ধে শ্বেতরক্তকণিকার কার্যক্রম ব্যাহত করে।
Collected From prothomalo