Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
দুবাইয়ে ভালো নেই বাংলাদেশি শ্রমিকেরা

স্থানীয় সময় দুপুর ১টা। দুবাইয়ের আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি পার্কিং-এরিয়ায় কাজ করছিলেন দুই শ্রমিক। দুজনের কথোপকথনে ধারণা করি তারা বাংলাদেশী। কাছে গিয়ে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তারা অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। 
দুজনই রাইজিংবিডিকে জানান, এখানে ক্লিনার হিসেবে কাজ করছেন তিন বছরের বেশি সময়। তীব্র রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পর মাসশেষে যে বেতন পান তা দিয়ে দেশে পরিবার চলে ঠিকই কিন্তু তারা কতোটা কষ্ট করেন সেকথা জানে না পরিবারের সদস্যরা। 
ইসমাইল (ছদ্ম নাম) নামে এক বাংলাদেশী শ্রমিক জানান, সেখানে দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাজ করে মাসে দেড় থেকে দুই হাজার দেরহাম বেতন পান। এই বেতন বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এই টাকার পুরোটা দেশে পাঠানোর চেষ্ঠা করেন। নিজে চলার জন্য ডিউটির অতিরিক্ত পার্কিং-এর গাড়ি পরিষ্কার করে কিছু আয় করেন। এভাবেই চলছে মাসের পর মাস।
হুমায়ুন নামে এক শ্রমিক জানান, পার্কিং-এ আসা গাড়িগুলো পরিষ্কার করে দেওয়ার জন্য তারা গাড়ির মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। কেউ সম্মত হলে ৫ থেকে ১০ দেরহাম বকশিস পান। এই বাড়তি টাকা দিয়ে দুবাইয়ে কষ্ট করে জীবন যাপন করছেন তার মতো আরো অনেকেই।  
দুবাইয়ের আজমানে কনস্ট্রাকশন সাইটে কর্মরত অপর এক বাংলাদেশী শ্রমিক পারভেজ জানান, দুবাইয়ে বর্তমান তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী। এই তাপমাত্রা মানে শীতকালই বলা চলে। পারভেজ বলেন ‘আমরা ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যেই ৮ ঘণ্টা রোদে কাজ করি। আমরা এই দেশে কত কষ্ট করে টাকা আয় করি তা বলে বুঝাতে পারবো না। মাসে যে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করি দেশে এমন পরিশ্রম করলে হয়তো আরও ভালো টাকা আয় করতে পারতাম। দুবাইয়ের এই নিষ্ঠুর শহরে এসে আমরা এখন সত্যিই অসহায়।’ 
দুবাইয়ে ভালো বেতনে দোকানে চাকরি দিয়ে ওয়ার্কিং ভিসা দেওয়া হবে- এমন প্রতিশ্রুতিতে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে দুইমাস আগে দুবাই এসেছেন আবু তৈয়ব। রাইজিংবিডিকে তৈয়ব বলেন, ‘আমার ভিজিট ভিসা নিয়ে দুবাইয়ে আসতে এক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন কাজের ভিসার জন্য আরও ২ লাখ দিতে হবে। এর মধ্যে যে কাজের কথা বলে আনা হয়েছিল তার পরিবর্তে কনস্ট্রাকশন শ্রমিক হিসেবে কাজ দেওয়া হচ্ছে।’
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করা তৈয়ব বলেন, ‘আমার পক্ষে এতো পরিশ্রমের কাজ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমি এখন কী করবো বুঝতে পারছি না। বাড়ি ফিরে যাওয়ার সামর্থও নাই। দুবাইয়ে আমরা কঠিন অবস্থার মধ্যে বেঁচে আছি।’
Collected from