আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির কার্যক্রমের আইনি কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি এ পরামর্শ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমে দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে বলে অভিমত ইউজিসির।
এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। তবে সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য আইনের ধারা ৯ এর শর্তসমূহ পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমে আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এজন্য জনস্বার্থে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করেনি।
অভিভাবকহীন এ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০০৬ সালের পর থেকে চ্যান্সেলর বা মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত কোনো ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। অর্থ্যাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এসব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ১৭ এবং ১৯ অনুযায়ী বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ২০০২ সালের ১৯ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমতি পায়। সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্তাবলী প্রতিপালন ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০০৬ সালে সরকার আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বন্ধ ঘোষণা করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করে স্থগিতাদেশ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের দাবিদার ৩টি পক্ষ বিভিন্ন ঠিকানায় বেআইনিভাবে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ইউজিসির তদন্ত কমিটির মতে, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কখনোই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্থক নয়। বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ১৪(১) ধারা অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণিত ৯টি কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি মাত্র। অথচ আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ৩টি গ্রুপ বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমার্থক বানিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির এসব কার্যক্রমে দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে।
Collected from jagonews24