Facebook Youtube Twitter LinkedIn
চীনের রফতানিমুখী খাতে শ্লথগতি শঙ্কায় অভিবাসী শ্রমিকরা

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পাশাপাশি দেশটির জিরো কভিড নীতি এতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব ডংগুয়ানে অভিবাসী শ্রমিকদের আধিপত্য দেখা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোয় সেখানে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বেইজিংয়ের কঠোর কভিড নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে অস্থিরতায় বৈশ্বিক চাহিদায় শ্লথগতি চীনের উৎপাদনমুখী খাতে মারাত্মক প্রভাব রেখেছে।

ক্রয়াদেশে ভয়াবহ পতনের জেরে গত জুলাইয়ে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে ডংগুয়ান কপ্পো ইলেকট্রনিক। বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর জন্য ব্লুটুথ হেডসেট তৈরি করে আসছিল কোম্পানিটি। তৈরি পোশাক ও জুতা উৎপাদনকারী অনেক ছোটখাটো প্রতিষ্ঠানও ক্রয়াদেশে পতনের ফলে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি অঞ্চলটির অন্যতম সফল কোম্পানি হিসেবে পরিচিত আলকো সম্প্রতি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। প্রায় ৩৬ বছর সচল থাকার পর সম্প্রতি কারখানা ও ব্যবসা বন্ধের ঘোষণা দেয় ইলেকট্রনিকস পণ্য নির্মাতা কোম্পানিটি। ভালো সময়ে হাজারো কর্মী ছিলেন আলকোতে, বর্তমানে তার ক্যাম্পাস জনশূন্য পড়ে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বন্ধের আগে হংকংভিত্তিক কোম্পানিটি জানায়, প্রলম্বিত মহামারীতে তাদের রফতানিমুখী বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। বড় অংকের লোকসান গোনার ফলে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া তাদের জন্য কঠিন ঠেকেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেও বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রনিকস পণ্য রফতানি নিয়ে কারখানা সরগম ছিল। কিন্তু এখন সেখানে কয়েকজন প্রহরী রয়েছেন মাত্র। একের পর এক কারখানা বন্ধের ফলে অনেক অভিবাসী শ্রমিককে পাততাড়ি গুটিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে হচ্ছে।

চীনের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল রফতানিমুখী খাত। কিন্তু দুই বছর ধরেই তাতে ভয়াবহ পতন দেখা যাচ্ছে। গত আগস্টে চীনের রফতানি বছরওয়ারি কমেছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। সাধারণত ক্রিসমাসের কেনাকাটার জন্য মাসটি থাকত চীনের ব্যস্ততম মাস। এমনকি গত দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি কমেছে তাদের। আগস্টে দেশটির কারখানা কার্যক্রম সূচক দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৫ পয়েন্ট। গত জুলাইয়ে যা ছিল ৫০ দশমিক ৪ পয়েন্ট।

চীনের রফতানির বেহাল দশা কাছ থেকে অনুভব করছেন দেশটির ২৮ কোটিরও বেশি অভিবাসী শ্রমিক। হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা কাই বাও (৩০) জানান, শ্রমিকরা ব্যয় কমিয়ে দিচ্ছেন। নতুন কর্মী নিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজের সন্ধানেও বের হতে পারছেন না। লকডাউনের ফলে ভ্রমণে জটিলতা তো রয়েছেই।

তিনি আরো জানান, তার মতো আরো ৭০ জন কর্মীর আয় অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।

গত জুনে অনেক কারখানা দিনের শিফট বন্ধ করে কেবল রাতের শিফটে কাজ চালিয়েছে। রাতের শিফটে বিদ্যুৎ বিল কম থাকার কারণে এ সুযোগ নিয়েছে তারা। কিন্তু সাম্প্রতিক খরা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে অনেক কারখানা সচল রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ডংগুয়ানের কারখানাই নয় বরং লেবার এজেন্সি, স্টোর ও রেস্টুরেন্টও তার উত্তাপ টের পাচ্ছে।

Collection from bonikbarta