Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
পশ্চিমবঙ্গে ‘সাদা খাতা’ জমা দিয়ে হাজার হাজার চাকরি

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে অগ্রগতির প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, তার তথ্য দেখে চমকে উঠছেন খোদ বিচারপতি। স্কুলের শিক্ষক ও কর্মী মিলিয়ে ৮ হাজার ১৬৩ জন চাকরি পেয়েছেন কার্যত সাদা খাতা জমা দিয়ে। ওএমআর শিট জালিয়াতি করেই সরকারি চাকরি পেয়েছেন তারা। খবর পিটিআই।
সিবিআই জানিয়েছে, পুরো ‘সাদা খাতা’ জমা দিয়ে বা সামান্য কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিয়ে আট হাজার জন মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছেন। তার মধ্যে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক হিসেবে ৯৫২ জন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯০৭ জন, গ্রুপ সি-র তিন হাজার ৪৮১ জন এবং গ্রুপ ডি-র দুই হাজার ৮২৩ জন জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছে।

একই রিপোর্ট বিচারপতি বসুর কাছেও পেশ করা হয়। বিচারপতি বসু বলেছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। সেই লড়াইয়ে আমিও সামিল হলাম।
গ্রুপ ডি স্তরের নিয়োগ নিয়ে বিচারপতি বসুর এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন। এ মামলাতেও তিনি সিবিআইকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সিবিআই জানিয়েছে, তারা দিল্লি ও গাজিয়াবাদে অভিযান চালিয়ে অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন (ওএমআর) শিটসহ হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছে। সেখানেই দেখা গেছে, সাদা খাতা বা অল্প কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে খাতা জমা দেয়া হয়েছে এবং তারা চাকরি পেয়েছে।

সিবিআইয়ের কাছ থেকে এই তালিকা পাওয়ার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, যারা সাদা খাতা বা কয়েকটা প্রশ্নের জবাব লিখেছেন, তাদের মধ্যে কতজন চাকরি পেয়েছেন এবং কতজন সুপারিশপত্র পেয়েছেন তার তালিকা করে তাকে দিতে হবে। তিনি আরও নির্দেশ দেন, ৩ অক্টোবর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বৈঠক করে এই তালিকা তৈরি করতে হবে।
এসময় তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রাপ্তরা নিজেরা খুব ভালো মতো জানেন সত্যি টা কী! আদালত তাঁদের অনুরোধ করছে চাকরি থেকে পদত্যাগ করুন। ৭ নভেম্বরের মধ্যে বেআইনি চাকরি প্রাপ্তদের পদত্যাগের একটা সুযোগ দিচ্ছে আদালত৷ আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বেআইনি চাকরি পেয়েও যদি পদত্যাগ না করেন, তদন্তে যদি ধরা পরে জালিয়াত চাকরি, তাহলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে হাইকোর্ট।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত মে মাসে। দুর্নীতি করে চাকরি নেয়ার অভিযোগে প্রথমে গ্রেফতার ও পরে চাকরি হারিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়াই শিক্ষকতার চাকরি থেকে অঙ্কিতা অধিকারীকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুলের শিক্ষক হিসেবে প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে চাকরিকালে যে বেতন পেয়েছেন, তার পুরোটা ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

collected from Somoynews