মালদ্বীপের শ্রমবাজার সম্প্রসারণে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের অনুরোধ
মোঃ ওমর ফারুক অনিক”(মালদ্বীপ) : মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী জনাব ইসমাইল ফাইয়াজ এর সাথে গতকাল সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশী অবৈধ কর্মীদের দ্রুত বৈধ করন ও বাংলাদেশ হতে নতুন কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ। মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী অবৈধ কর্মীদের বৈধ করণের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং দ্রুত বৈধ হওয়ার জন্য মান্যবর হাইকমিশনারকে বিস্তারিত অবহিত করেন। অর্থমন্ত্রী আরও জানান বাংলাদেশী কর্মী মালদ্বীপের বিভিন্ন কোম্পানীতে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। কর্মীদের চাকরির শর্তাবলী যেমন, নিয়মিত বেতন প্রদান, উন্নত থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করায় কর্মীরা মালদ্বীপের অধিকাংশ কোম্পানীর প্রতি যেমন সন্তুষ্ট তেমনই তারা মালদ্বীপের প্রতিটি সেক্টরে কাজের সার্বিক মান উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
মান্যবর বাংলাদেশ হাইকমিশনার প্রস্তাবিত কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বাংলাদেশী অবৈধ কর্মীদের বৈধ করনের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়ায় মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের শ্রমবাজার সম্প্রসারণের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হাইকমিশনার আরও অধিক সংখ্যায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের অনুরোধ করেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন এমন পদগুলোতে বাংলাদেশী কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব কম হওয়ায় এই শুন্যতা পূরণে অধিক সংখ্যায় দক্ষ পেশাজীবী কর্মী নিয়োগে মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। মান্যবর হাইকমিশনার বলেন বাংলাদেশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে দক্ষতা এবং দেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষ পেশাজীবী মানব সম্পদ তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে বিশ্ব শ্রমবাজারে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে। মন্ত্রী মহোদয় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে মন্যবর হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করেন এবং এ সংক্রান্ত একটি কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়া তৈরির জন্য আলোচনার প্রস্তাব রাখেন। দীর্ঘ বৈঠকে দু’দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন হাইকমিশনার ও মন্ত্রী মহোদয়। বাংলাদেশ হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সংঘটিত হয়েছে সে সম্পর্কেও মন্ত্রী মহোদয়কে অবহিত করেন।
উক্ত সাক্ষাৎকালে মালদ্বীপের অর্থ-মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জনাব রিয়াজ মনসুর ও জনাব মরিয়ম নাজিমা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব, দুতাবাস প্রধান (শ্রমঃ) জনাব মোঃ সোহেল পারভেজ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত্ব, মালদ্বীপে বর্তমানে বাংলাদেশী শ্রমিক সংখ্যা প্রায় এক লাখেরও বেশি। এর মধ্যে পঞ্চাশ হাজারের মতো শ্রমিক অবৈধভাবে অবস্থান করছেন এবং অনিয়মিতভাবে কাজ করছেন। গত ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশ থেকে নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। যদিও অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিনিয়ত কর্মী আসছে মালদ্বীপে।
Collected from arthoniteerkagoj