Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
টুইটারের চাকরি খুইয়ে কয়েকশ’ কোটি টাকার মালিক পরাগ, দাবি রিপোর্টে

আর ক’দিন বাদেই টুইটারের সিইও হিসেবে এক বছর পূর্ণ হতো ভারতীয় পরাগ আগরওয়ালের। কিন্তু তার আগেই তাকে ছাঁটাই করে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার টুইটার কিনে নিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নিমাণ প্রতিষ্ঠান ’টেসলা’ প্রধান ইলন মাস্ক। ‘মাইক্রো ব্লগিং সাইট’-এর মালিকানা হাতে পাওয়ার পরই পরাগকে সিইও পদ থেকে ছেঁটে ফেলেছেন তিনি।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে টুইটার কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন ইলন মাস্ক। তারপর থেকেই জল্পনা চলছিল, মাস্কের হাতে টুইটারের মালিকানা এলে, অনেককেই তিনি ছাঁটাই করতে পারেন। এমনকি, টুইটারের পরিচালনায় যারা রয়েছেন, তাদের নিয়ে মাস্কের অসন্তোষের কথাও জানা গিয়েছিল। ফলে পরাগকে বরখাস্ত করার চর্চা তখন থেকেই চলছিল।

টুইটারে পরাগের উত্থান ছিল দেখার মতো। ২০১১ সালে এই সংস্থায় যোগ দেওয়ার আগে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন পরাগ। সেই সময় সংস্থায় হাজার জনেরও কম কর্মী ছিলেন।
কয়েক বছরের মধ্যেই ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে বড় লাফ দেন পরাগ। সংস্থার ‘চিফ টেকনোলজি অফিসার’ (সিটিও) পদে নিযুক্ত হন তিনি।

এরপর গত বছরের নভেম্বরে টুইটারের সিইও হিসেবে পদোন্নতি ঘটে পরাগের। সিইও হিসেবে বার্ষিক ১০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি টুইটারের শেয়ার বাবদ পরাগ পাবেন সোয়া কোটি ডলার।

টুইটারের সঙ্গে দীর্ঘ যাত্রাপথের শরিক পরাগকে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এজন্য অনেক টাকা গুনতে হবে মাস্ককে।

গবেষণা সংস্থা ‘ইক্যুইলার’ জানিয়েছে, মালিকানা বদলের ১২ মাসের মধ্যে যদি পরাগকে বরখাস্ত করা হয়, তাহলে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার দিতে হবে তাকে। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৪৫ কোটি রুপির বেশি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২৬ কোটি টাকা।

পরাগের ক্যারিয়ারের সাফল্য রীতিমতো চোখধাঁধানো। কখনওই তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৮৪ সালের ২১ মে রাজস্থানের আজমেঢ়ে জন্ম পরাগের।

পরাগের বাবা ছিলেন ‘ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটোমিক এনার্জি’ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা। মা অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা। ২০০১ সালে মুম্বাইয়ের ‘অ্যাটোমিক এনার্জি জুনিয়র’ কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হন পরাগ।

ওই বছরই তুরস্কে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে’ স্বর্ণপদক পান পরাগ। এরপর ২০০৫ সালে আইআইটি বম্বে থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক করেন।

আইআইটি বম্বের পর পরাগের গন্তব্য ছিল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পিএইচডি করেন।

স্ট্যানফোর্ডে পিএইচডি সম্পূর্ণ করার পরই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টুইটারে যোগ দেন পরাগ। সেই সফর বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর আচমকাই শেষ হল।

পরাগের স্ত্রীর নাম বিনীতা আগারওয়াল। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর টুইটারের সিইও হিসেবে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন পরাগ।

পরাগের সম্পত্তির পরিমাণ আকাশছোঁয়া। সংবাদ সংস্থা সূত্রের দাবি, টুইটারের প্রাক্তন সিইও’র মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১২১৮ কোটি রুপি।

একাধিক জায়গায় বাড়ি রয়েছে পরাগের। নয়াদিল্লিতে চারটি পেন্টহাউস রয়েছে তার। এছাড়াও নিউইয়র্কে পেন্টহাউস, ফ্ল্যাট রয়েছে। টেক্সাসেও বাড়ি রয়েছে পরাগের।

বাড়ির পাশাপাশি গাড়ির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড রোভার, রেঞ্জ রোভারের মতো বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে পরাগের।

তবে এত সম্পত্তি থাকলেও টুইটারের সিইও পদ থেকে যেভাবে রাতারাতি পরাগকে বরখাস্ত করলেন ইলন মাস্ক, তা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। যদিও টুইটার থেকে বিদায়ের পর মোটা অংকের অর্থ পাবেন পরাগ। কিন্তু যিনি সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে টুইটারের মতো সংস্থার শীর্ষপদে যেভাবে আসীন হয়েছিলেন, তার বিদায়বেলা যে এতটা নিষ্ঠুর হবে, তা বোধহয় অনেকেই ভাবেননি। সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে
Collected from pratidin



Do you Need Any Help?