পুরনো চাকরি ছেড়ে নতুনের সন্ধানে এশীয় কর্মীরা
বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপ অনেকটাই প্রশমিত। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলছে। তবে মহামারীর সুপ্ত কিছু রেশ যেন স্থায়ীভাবে প্রভাবিত করে গেছে মানবজাতিকে।
বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে কর্মী নিয়োগ ও মানবসম্পদ পরিষেবা প্রদান করে ব্রিটিশ বহুজাতিক কোম্পানি হেইস। তাদের বরাত দিয়ে নিক্কেই এশিয়া জানাচ্ছে, কভিড মহামারীর পর থেকে এশিয়ার কর্মীরা তাদের পুরনো চাকরি ছেড়ে ‘নতুন সুযোগ’ খুঁজতে অনেক বেশি তত্পর হয়ে উঠেছে। নতুন সুযোগ বলতে অনেক বেশি শোভন কর্মপরিবেশ—যেখানে মূল্যায়ন করা হয় কর্মীদের সামাজিক ও মানবিক বিষয়গুলো।
হেইসের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন অ্যালিস্টার কক্স। নিক্কেই এশিয়াকে তিনি বলেন, গোটা বিশ্বের মতো এশিয়াতেও বড় ধরনের চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। বছরজুড়ে এখানকার চাকরিবাজারের গরম বাতাস আমরা পরিলক্ষিত করেছি। আমরা দেখেছি, কর্মীরা এখন নমনীয় পরিবেশ, ভালো বেতন ও আকর্ষণীয় পরিবেশে কাজের সুযোগ খুঁজছেন।
কভিড-১৯ মহামারী ক্রমে ত্বরান্বিত করেছে ডিজিটালাইজেশন ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে। তবে জাপানসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশ দক্ষ ও মেধাবী কর্মী সংকটে ভুগছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। শুধু সাধারণ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মী নয়, বিশেষ করে উদীয়মান নতুন প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অ্যালিস্টার আরো বলেন, লাইফ সায়েন্স ও স্বাস্থ্যসেবাসহ এ ধরনের অনেক পেশাদার ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলোয় দক্ষ কর্মীর তীব্র ঘাটতি বিদ্যমান। ঘাটতি বলতে আমরা এখানে হাজার থেকে লাখো পরিমাণ দক্ষ কর্মী সংকটের কথা বলছি।
কভিড মহামারীর সময়গুলোয় মানুষ এক ধরনের আত্মোপলব্ধির মধ্য দিয়ে গেছে। এশিয়া থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বজুড়ে কর্মীরা এখন কোম্পানিগুলো কী ধরনের কাজ করে বা তাদের উদ্দেশ্য কী—এ বিষয় যেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন তেমনি চাকরির স্থায়িত্বের দিকটিও আমলে নিয়েছেন। কর্মীরা ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে বেশি বেশি মনোযোগী যারা পরিবেশগত গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, নতুন কর্মপরিবেশের সন্ধানরত এ কর্মীদের বেশির ভাগের জন্মই আশি থেকে নব্বইয়ের দশকের দিকে। আমরা যাদের বলি মিলেনিয়াল প্রজন্ম। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি ক্রেতারাও এখন অনেক বেশি সচেতন। তারাও কোম্পানির সুশাসন, সামাজিক অংশগ্রহণের বিষয়গুলোকে মূল্যায়ন করেন।
বিশ্বজুড়ে ৩২টি দেশে ২৫০টিরও বেশি অফিস রয়েছে হেইসের। প্রতিষ্ঠানটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে দিনে গড়ে ১ হাজার ৩০০টির বেশি নিয়োগ দেয় তারা।
অ্যালিস্টার কক্স বলেন, তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান চাকরিপ্রার্থীদের মানসিকতার পরিবর্তনগুলোকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। গত বছর জার্মানি ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থিত অফিসগুলোয় তারা ‘সাসটেইনেবিলিটি ডেস্ক’ স্থাপন করেছেন। যার মাধ্যমে তারা কোম্পানিগুলোকে কর্মীদের পরিবর্তিত মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরিতে সহযোগিতা করে থাকেন।
Collected from bonikbarta