Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রীর বিবৃতি

প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ায় আবারো বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এক বিবৃতি দিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।

রোববার মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে এম সারাভানান জানিয়েছেন, শ্রমিক নিয়োগের ২৫টি রিক্রুটমেন্ট কোম্পানি বাছাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।


তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার বৈঠক এবং আমাদের দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে বর্তমান অবস্থার ব্যাখ্যা ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তার সঙ্গে বৈঠকে বিদেশি শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা এবং আমার মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের উন্নততর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।


মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৫২০টি রিক্রুটমেন্ট কোম্পানির একটি তালিকা দিয়েছিল। তার মধ্য থেকে মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় বাছাই করেছে ২৫টি কোম্পানিকে। এই উদ্যোগ শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ছিল মাত্র ১০টি কোম্পানি। এই ১০টি কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসা প্রকৃতির কারণে বহু শ্রমিক উন্নত কাজের প্রতিশ্রুতিতে প্রলুব্ধ হয়েছেন এবং উভয় দেশের বিভিন্ন এজেন্সির কাছে তারা জিম্মি থেকেছেন। তাই বিদেশি শ্রমিকদের কল্যাণ এবং জীবনধারাকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে রিক্রুটমেন্ট কোম্পানির সংখ্যা ১০ থেকে বাড়িয়ে ২৫টি করতে সম্মত হই আমরা। যাতে ২৫টি কোম্পানির ক্ষেত্রে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স কৌশল নিশ্চিত করা যায়। এ জন্য একচেটিয়া ব্যবসা ও এক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কর্মোদ্যম শ্রমিক পাওয়ার জন্য আরও ভাল উদ্যোগ নেয় মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়।


বাংলাদেশ থেকে দেয়া তালিকা থেকে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় আরও ২৫০টি কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়। বাছাই করা এই কোম্পানিগুলো ওই ২৫টি কোম্পানির কাঠামোর অধীনে কাজ করবে। আরো সহজ করে বলা যায়, ২৫টি কোম্পানির প্রতিটি ১০টি করে কোম্পানিকে অনুমোদন দিতে পারবে। তা করা যাবে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী এবং নির্দেশনা অনুসরণ করে।


মন্ত্রী আরও বলেন, এখন ২৫টি এবং ২৫০টি কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য কি? সর্বপ্রথম মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুধু ২৫টি নির্দিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে কাজ করবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের নিবিড় নজরদারি থাকবে। এক্ষেত্রে বিদেশি শ্রমিকদের বসবাস ও কর্মক্ষেত্রের পরিস্থিতি তথা তাদের কল্যাণের বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নির্দেশনা নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা সেটাই নিশ্চিত করা হবে। জোরপূর্বক শ্রম মোকাবিলায় গুরুত্ব দিয়েছে মালয়েশিয়া। কারণ, এতে আন্তর্জাতিকভাবে দেশের মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয়ত, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় যেসব প্রক্রিয়া বেধে দেবে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে তা এবং আন্তর্জাতিক রীতি ওই ২৫০টি কোম্পানি অনুসরণ করছে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এককভাবে ওই ২৫টি কোম্পানির।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু দেশকে শ্রমিক নেয়ার সোর্স হিসেবে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকারে দিয়েছে বলে যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে, তা এখানে পরিষ্কার করতে চাই। এর বিপক্ষে গিয়ে মন্ত্রণালয় বলতে চায় যে, চাহিদা পূরণের জন্য বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে আমাদের সম্মানিত কোম্পানিগুলো যে দাবি তোলে তা অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে শুধু যুক্ত মন্ত্রণালয়। শ্রমিক নিয়োগের সোর্স হিসেবে ১৪টি দেশ আছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, যেকোনো দেশ থেকে যেকোন কোম্পানি তাদের শ্রমিক সংগ্রহ করতে পারে। যখন আমি দায়িত্বে এসেছি, তখনই একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা হলো, শ্রমিক নিয়োগে পূর্বের মতো তাড়াহুড়ো করে সরাসরি এবং বিশেষ অনুমোদন দেয়া হবে না। আগের ওই চর্চার ফলে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। তার ফলে আমাদের আন্তর্জাতিক সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।

তাই সব অনুমোদন অবশ্যই আসতে হবে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে। এরই মধ্যে এই চর্চা কঠোরভাবে শুরু হয়েছে। দৃশ্যত একে একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হতে পারে, কিন্তু ভবিষ্যতে এর একটি ইতিবাচক ফল আছে। তাই বুধবার থেকে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের জন্য ওয়ান স্টপ সেন্টারে সবার জন্য তথ্য আছে। আমাদের শ্রম ক্ষেত্রে শ্রমিকেদের যে সঙ্কট আছে, তা কাটিয়ে উঠার জন্য মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিজন মানুষ যে অক্লান্ত কাজ করেছেন তার জন্য তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। তারা চেষ্টা করেছেন এই কর্মকাণ্ড এবং এ সংক্রান্ত শিল্পকে সহায়তা করতে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিজনেস কমিউনিটিকে অব্যাহত সহযোগিতা করতে আমাদের ডিপার্টমেন্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
Collected from bangladesherkhabor



Do you Need Any Help?