কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য সমাধান খুঁজতে নিজেদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটিশ স্যাটেলাইট কোম্পানি ভার্জিন অরবিট।
পাশাপাশি, কোম্পানির প্রায় সকল কর্মীও ছাঁটাই হবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কর্মীদেরকে এই খবর জানান বুধবারের এক বৈঠকে। পাশাপাশি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই সম্পর্কে পরবর্তী আপডেট জানানোর বিষয়টিও উল্লেখ করেন তারা।
বিবিসি বলছে, জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের ভূমি থেকে নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পরপরই কোম্পানির এই পদক্ষেপ এলো।
ওই বৈঠকে উপস্থিত এক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ড্যান হার্ট কর্মীদের বলেন, এই ছাঁটাই কার্যক্রমের সহায়তায় নতুন বিনোয়োগ পরিকল্পনা সাজানোর সময় পাবে ভার্জিন অরবিট।
এই স্থগিতাদেশ কতো সময় দীর্ঘ হবে, ওই বিষয়টি পরিষ্কার না হলেও হার্ট বলেন, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে এই সম্পর্কে আরও তথ্য পাবেন কর্মীরা।
রয়টার্স বলছে, বর্ধিত ট্রেডিংয়ে ভার্জিন অরবিটের শেয়ারমূল্য ১৮ দশমিক আট শতাংশ কমে গিয়ে ঠেকেছে ৮২ সেন্টে।
এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, “ভার্জিন অরবিট পুরো কোম্পানির কার্যক্রম স্থগিত করছে। আর এটা কার্যকর হবে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ থেকে। আসন্ন সপ্তাহগুলোতে এই সম্পর্কে আপডেট পাবেন আগ্রহীরা।”
জানুয়ারির উৎক্ষেপণে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে মহাকাশে পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যের কর্নওয়াল অঞ্চলের নিউকুয়ে শহর থেকে একটি রকেট বহন করে ভার্জিন অরবিট পরিচালিত এক জাম্বো জেট। রকেটটি ঠিকমতো জ্বলে সঠিক পথে যেতে শুরু করলেও পরবর্তীতে ‘গোলযোগ’ দেখা দেয় এতে।
আর এতে বহন করা স্যাটেলাইটও মুক্ত করা সম্ভব হয়নি ও এটি হারিয়ে যায়। তবে, এগুলো বহন করা ‘কসমিক গার্ল’ নামের বোয়িং ৭৪৭ জেট নিরাপদেই ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
পরবর্তীতে ভার্জিন অরবিট বলেছে, এই মিশন ব্যর্থ হয়েছে কারণ এর রকেটে জ্বালানী সরবরাহ করা এক ফিল্টারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ফলে, ইঞ্জিনের তাপও মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার কোম্পানির প্রকাশ করা বিবৃতি অনুযায়ী, এই ব্যর্থতার পেছনের কারণ অনুসন্ধান ‘প্রায় শেষের দিকে’। আর তাদের পরবর্তী রকেট উৎপাদনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন’সহ ‘ইন্টিগ্রেশন’ ও পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
যুক্তরাজ্যের মহাকাশ খাতে এই মিশন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। কারণ, এর মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো নিজ মাতৃভূমিতে রকেট উৎক্ষেপণের সূচনা করেছে দেশটি।
বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের লক্ষ্য, নিজেদেরকে এই খাতের একটি বৈশ্বিক খেলোয়াড়ে রূপান্তর করা। এর মধ্যে রয়েছে রকেট তৈরি ও নতুন মহাকাশ বন্দর তৈরির মতো বিষয়াদিও।