দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনে দক্ষ জনশিক্ত গড়তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের প্রতিটি পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তরের কথা বলছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনে দক্ষ জনশিক্ত গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সোমবার (২০ মার্চ) ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৫তম সমাবর্তনে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থার সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত এবং শিক্ষা কার্যক্রমে গুণগত উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেভাবে ডিগ্রি অর্গানাইজড আছে তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমাদের মডিউলার এডুকেশনে যাওয়ার কথা। সামনে যে দিন আসছে, যেভাবে দ্রুত পৃথিবী পরিবর্তন হচ্ছে, তাতে শিক্ষার্থীরা আজ যে ডিগ্রি অর্জন করে যাচ্ছে পাঁচ বছর পর তা আর প্রয়োজন নাও হতে পারে। সে জন্য রিস্কিল করতে হবে, আপস্কিল করতে হবে।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। স্মার্ট বাংলাদেশ হবে এমন– যেখানে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অশিক্ষা থাকবে না। মানুষ তার সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকবে। একটি দেশ তখনই স্মার্ট দেশ হিসেবে গণ্য হবে, যখন তার যাবতীয় কর্ম তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় ও ব্যবহারে ঘটবে। ইতোমধ্যে সরকার কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের মেগা প্রকল্প ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন’ অনুমোদন করছে। এটি কারিগরি শিক্ষার ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। প্রকল্পটি মোট ২০ হাজার ৫২৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছরে বাস্তবায়িত হবে।’
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে আসছে মন্তব্য করে তিরি বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি বাংলাদেশ এবং বিশ্বের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকতে হবে।’
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আজ যারা স্নাতক হচ্ছেন তাদের প্রতি ও তাদের অভিভাবকদের প্রতি অভিনন্দন ও শুভকামনা রইলো। স্নাতকরা তাদের নিজ জীবন গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বের প্রতি দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবেন বলে প্রত্যাশা করি।’
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ, সমাবর্তন বক্তা ওমর ইশরাক, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষকমণ্ডলী ও স্টাফরা।
Collected From Banglatribune