Facebook Youtube Twitter LinkedIn
...
প্রথম শ্রেণিতে কোনো পরীক্ষা হবে না

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে কোনো প্রান্তিক মূল্যায়ন বা পরীক্ষা হবে না। আর প্রাক্-প্রাথমিক শ্রেণিতে কোনো মূল্যায়নই হবে না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মূল্যায়নের বিষয়ে এমন সাতটি নির্দেশনা দিয়ে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

বুধবার (৯ মে) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগ থেকে দেওয়া নির্দেশনাপত্র থেকে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বছরে তিনটি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে। এগুলো হলো প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন (প্রথম সাময়িক), দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (দ্বিতীয় সাময়িক) এবং বার্ষিক মূল্যায়ন বা বার্ষিক পরীক্ষা।


চলতি মাসে প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন হওয়ার কথা। এটি সামনে রেখেই মূলত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মূল্যায়নের বিষয়ে এ নির্দেশনা দিয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যারা প্রাথমিক স্তরেও পড়ায়, সেগুলোর বিষয়ে নির্দেশনা না থাকায় একধরনের বিভ্রান্তি আছে। কোনো কোনো বিদ্যালয় প্রথম শ্রেণিতেও পরীক্ষা নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। অথচ এসব বিদ্যালয়েও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে।

গত জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে তা শুরু হবে। এরপর ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)।


তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে। এ অবস্থায় এখন মূল্যায়নের বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা দিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এখন যেহেতু প্রাথমিকে কেবল প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে, সে জন্য এ শ্রেণির বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আর দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতির আগে যেভাবে মূল্যায়ন হতো, এখন সেভাবেই হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়।

মাঠ পর্যায়ের স্কুল শিক্ষক-কর্মকর্তারা কীভাবে প্রতিপালন করবেন সেজন্য নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

নির্দেশনায় বলা হয়,
১. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২৩ বর্ষপঞ্জিতে উল্লিখিত মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রান্তিকের মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা রুটিন প্রণয়ন করবেন।

২. সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে বিষয় শিক্ষকের মাধ্যমে জ্ঞান, অনুধাবন ও প্রয়োগমূলক শিখনক্ষেত্র বিবেচনায় বিদ্যালয় বা ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে।

৩. মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কাছ থেকে ফি গ্রহণ করা যাবে না।

৪. বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী প্রশ্নপত্র কম্পিউটারে কম্পোজ করে ফটোকপি করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফটোকপি ও উত্তরপত্র (খাতা) সহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খাত বা স্লিপ ফান্ড থেকে নির্বাহ করতে হবে।


৫. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কোনও মূল্যায়ন বা পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না।

৬. পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর) অনুযায়ী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন করতে হবে। প্রথম শ্রেণিতে কোনোরূপ প্রান্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।

৭. দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে কোডিড পরিস্থিতির অব্যবহিত আগের নিয়মানুযায়ী মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে হবে।

প্রাথমিক স্তরের শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের একটি নির্দেশিকা প্রাথমিক স্তরের প্রথম শ্রেণির জন্য রচিত সব শিক্ষক সহায়িকা সঙ্গে সংযুক্ত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ওয়েবসাইটে www.nctb.gov.bd  আপলোড করা হয়েছে।

এছাড়া, শিক্ষকদের মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা ও তথ্য সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি বিষয়ের ওপর অর্জন উপযোগী যোগ্যতা ও শিখনফলের নম্বর উল্লেখ করে শিক্ষক ডায়েরি-১ এবং শিক্ষক ডায়েরি-২ নামে দুটি ওয়ার্ড ও পিডিএফ ফাইল আপলোড করা আছে। সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান বা শিক্ষকরা উক্ত ফাইল ডাউনলোড করে নির্দেশনা অনুযায়ী মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন এবং প্রতি প্রান্তিকে শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতির প্রতিবেদন প্রদান করতে পারবেন।
Collected From Risingbd