বাংলা প্রথমপত্রে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে যা করবে
15/07/2024
292 Views
সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশাকরি ভালো আছ। সামনে তোমাদের এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষা। এ সময়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মানসিক চাপে থাকে। কোন বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি হয়েছে; কোন বিষয়ে ভালো প্রস্তুতি হয়নি- এসব ভাবনা মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। বাংলা ও ইংরেজির মতো বিষয়গুলোর পরীক্ষা প্রথমে হওয়ায় এ বিষয়ে মানসিক চাপ আরও বেশি থাকে। আমি তোমাদের এমন মানসিক চাপ কমানোর জন্য বাংলা প্রথমপত্রে ভালো ফলাফল করার কিছু দিক-নির্দেশনা দিচ্ছি। আশাকরি তোমরা উপকৃত হবে।
বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় এগারোটি প্রশ্ন থেকে তোমাদের সাতটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্ন লেখার জন্য সর্বোচ্চ বিশ মিনিট সময় নেয়া যেতে পারে। প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নে চারটি প্রশ্ন থাকবে। ক নম্বরে জ্ঞান স্তরের প্রশ্ন থাকবে। এটি সরাসরি বই থেকে থাকবে। এ প্রশ্নের উত্তর এক বাক্যে কিংবা এক শব্দে লেখা যেতে পারে। সর্বোচ্চ এক মিনিট সময় পাবে উত্তর লেখার জন্য। খ নম্বরে অনুধাবন স্তরের প্রশ্ন থাকবে। এ প্রশ্নের উত্তর দুটি অংশে লেখবে। প্রথমে জ্ঞান অংশ; যা ১-২ বাক্যে লিখতে হবে। দ্বিতীয় অংশে অনুধাবন; যা ৪-৫ বাক্যে লিখতে হবে। অনুধাবন স্তরের প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য চার মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। গ নম্বরে প্রয়োগ স্তরের প্রশ্ন থাকবে। এ প্রশ্নের উত্তর তিনটি অংশে লিখবে। এখানে উত্তর লেখার জন্য উদ্দীপকের সঙ্গে পাঠ সংশ্লিষ্ট গদ্য কিংবা কবিতার অংশের মিল-অমিল দেখানো হয়। প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় প্রথমে জ্ঞান অংশে মিল-অমিল তুলে ধরতে হয়। দ্বিতীয় প্যারায় জ্ঞান অংশ অনুসারে গদ্য/ কবিতার কথা এবং তৃতীয় প্যারায় জ্ঞান অংশ অনুসারে উদ্দীপকের কথা লিখতে হবে। সর্বোচ্চ ছয় মিনিট সময় বরাদ্দ এ প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য। ঘ নম্বরে উচ্চতর দক্ষতা স্তরের প্রশ্ন থাকবে এবং এটি চার প্যারায় লেখবে। প্রথম প্যারায় উদ্দীপক ও পাঠ্য সংশ্লিষ্ট গদ্য/কবিতার সঙ্গে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সিদ্ধান্ত অনুসারে ২-৩ বাক্যে যুক্তি দিতে হবে। দ্বিতীয় প্যারায় সিদ্ধান্ত অনুসারে বইয়ের কথা অনুধাবন লিখতে হবে। তৃতীয় প্যারায় সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োগ লিখতে হবে। এরপর চতুর্থ প্যারায় অনুধাবন ও প্রয়োগের বিষয়ের তুলনামূলক আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পুনরায় প্রতিস্থাপন করতে হবে। সর্বোচ্চ নয় মিনিট সময় পাওয়া যাবে এ প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত কোনো কথা লেখা যাবে না। প্রয়োজনীয় কথা বাদ দেওয়া যাবে না। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পৃষ্ঠা গণনা করে লেখার সুযোগ নেই।
যেহেতু তোমাদের সিলেবাস অর্ধেক করা হয়েছে। তাই সাতটি গদ্য ও সাতটি কবিতার উপর বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর খুব বেশি গভীরে যাবে না। তোমাদের উচিত হবে- প্রতিটি গল্প-প্রবন্ধ ও কবিতা লাইন ধরে ধরে পড়বে। শব্দার্থ, পাঠ পরিচিতি ও লেখক পরিচিতি মনোযোগ সহকারে পড়বে। উপন্যাস ও নাটকের ব্যক্তির নাম, গ্রামের নাম, কে কোন কাজ করত, কার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে, কোন সংলাপ কোন অংশে এবং কোন দৃশ্যে, কোন দৃশ্য কোন তারিখে এবং কোথায় হয়েছে, কোন দৃশ্যে কে কে রয়েছে ইত্যাদি গভীরভাবে জানতে হবে। প্রতিটি অনুধাবন প্রশ্নের কিংবা ব্যাখ্যামূলক লাইনের উত্তর জ্ঞান ও অনুধাবন অংশে বিভাজন করে উত্তর শিখবে। বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে সবগুলো অপশন পড়ে তারপর উত্তর বিবেচনায় আনতে চেষ্টা করবে। অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় দুটি প্রশ্ন ভালো করে পড়বে। অনেক সময় প্রথম প্রশ্নের উত্তর দ্বিতীয় প্রশ্নে ধরা যায়। ত্রিশটি বহুনির্বাচনি প্রশ্নের ১৪-১৬টি জ্ঞান স্তরের, ১০-১২টি অনুধাবন স্তরের, ৪-৬টি প্রয়োগ স্তরের এবং ৩-৪টি উচ্চতর দক্ষতার স্তরের প্রশ্ন থাকবে। সেজন্য গল্প-প্রবন্ধ, কবিতা, উপন্যাস ও নাটকের জ্ঞান স্তরের তথ্য যাদের দখলে থাকবে তারা বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরে ভালো করবে। তাড়াহুড়া না করে গভীরভাবে চিন্তা করে উত্তর চিহ্নিত করতে হবে। উপন্যাস ও নাটক শুরুর আগে বিষয় সংশ্লিষ্ট অংশ থেকে জ্ঞান অংশের প্রশ্ন থাকতে পারে। সংজ্ঞা ও শ্রেণিকরণ থেকে অনেক সময় বহুনির্বাচনি প্রশ্ন আসে।
Collected From Jugantor