এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষার্থীর প্রতি শুভেচ্ছা রইল। তোমরা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বিগত মাসগুলোতে যে পড়ালেখা করেছ, তার আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন ৩০ জুন থেকে শুরু হবে। বিগত বছরগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা ও পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের একটা প্রধান লক্ষ্য তোমাদের উচ্চমানের ফলাফলের জন্য তৈরি করা; সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তোমাদের তৈরি করতে চেষ্টা করা হয়েছে বুঝতে ও জানতে, শেখানো- কী ভালো ও কী মন্দ, কী ঠিক ও কী ভুল এবং বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারা। এ সামগ্রিক বিষয়গুলো বিবেচনা করেই তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ভালো ও উচ্চমানের ফলাফল অর্জনের প্রধান মাপকাঠি হলো নিয়মিত পড়ালেখা করা ও মূল বই পড়া, তাহলে আর আলাদা বা বিশেষ কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না।
পরীক্ষা প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজগুলো হলো পাঠ্যপুস্তক ও মূল বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সার্বিক ধারণা রাখা এবং পরিকল্পনা করে বিষয়বস্তুগুলো পুনরালোচনা করা। তোমাদের চিহ্নিত করতে হবে কোন বিষয়গুলো কম বুঝ ও অস্পষ্ট এবং কোথায় শুধরে নিতে হবে এবং পড়ালেখা করে এগুলো সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে হাতের লেখার চর্চা করতে হবে, পড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন লেখার অনুশীলন করতে হবে যাতে হাতের লেখা সুন্দর ও বানান শুদ্ধ হয়।
পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর, প্রথমে প্রশ্নপত্রটি ভালোভাবে পড়বে ও বুঝতে চেষ্টা করবে। প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য সমান ভাগ করে উত্তর লিখবে। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর সবচেয়ে ভালো পার, সেগুলো প্রথম লিখবে ও সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিবে। হাতের লেখা সুন্দর ও পরীক্ষার উত্তরপত্রটি পরিচ্ছন্ন ও গুছানো হতে হবে। প্রশ্নের উত্তরগুলো প্রাসঙ্গিক, পরিমিত ও যৌক্তিক হতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি প্রশ্নের উত্তরগুলো সাবলীল ভাষায় ও নির্ভুল বানানের হতে হবে। কোনো উদ্ধৃতি ব্যবহার করলে তা যৌক্তক, প্রাসঙ্গিক, সঠিক ও সঠিক উৎসের হতে হবে। সব তথ্য মূল বইভিত্তিক ও যৌক্তিক উৎসের হওয়া বাঞ্ছনীয়। গণিত, বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়গুলোর বিষয়বস্তু বুঝে পড়তে হবে এবং উত্তরগুলো সঠিক তথ্য দিয়ে লিখতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় মনে রাখতে হবে প্রশ্নের ধাপগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি ধারাবাহিক যুক্ত, উত্তরগুলোও একটির সঙ্গে আরেকটি ধারাবাহিক ও যৌক্তিকভাবে যুক্ত। এ ধারাবাহিকতার যৌক্তিকতা রক্ষা না করলে ভালো নম্বর পাবে না। ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের বিষয়গুলোর উত্তর লেখার ক্ষেত্রেও এ বিষয়গুলো মনে রাখতে ও মেনে চলতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর নির্ধারিত সময়ের থেকে ১৫ মিনিট আগে পরীক্ষা শেষ করে উত্তরগুলো আবার মনোযোগ দিয়ে পড়েই তবে উত্তরপত্র জমা দিবে।
চলমান যানজটের কথা বিবেচনা করে নির্ধারিত সময়ের ২০ থেকে ২৫ মিনিট আগেই পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হবে। সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য খেতে হবে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা নিশ্চিত করতে হবে।
* যেসব বিষয়ে চিত্র, মানচিত্র, তালিকা সূচি দিতে হয় সেগুলোতে চিত্র, মানচিত্র ও তালিকা সূচি দিলে বেশি নম্বর পাবে। * হাতের লেখা সুন্দর করে লিখবে এবং প্রশ্নে যা চাওয়া হয়েছে তার যথাযথ উত্তর দেবে অযথা কোনো প্রশ্নের উত্তর বেশি বড় বা বেশি ছোট করার প্রয়োজন নেই। * তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবে। * পরীক্ষার আগের দিন পেনসিল, কলম, ইরেজার, সার্পনার, জ্যামিতি বক্স, প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড গুছিয়ে রাখবে। সকালে যাতে তাড়াহুড়া করতে না হয়। * মূল উত্তরপত্র শিট পেয়ে সেটিতে সঠিকভাবে সব তথ্যের বৃত্ত ভরাট করবে। * বানান শুদ্ধ করে লিখবে এবং সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটাবে না। * ক্যালকুলেটর একমাত্র নন-প্রোগ্রামেবল ব্যবহার করতে পারবে। * উত্তর লেখার সময় কোনোরূপ কাটাকাটি ঘষামাজা কালি লেপ্টানো ইত্যাদি করে লিখবে না। কোনো কাটার প্রয়োজন হলে একটান দিয়ে কেটে সঠিক উত্তরটি লিখবে। * পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর যে প্রশ্নগুলো সবচেয়ে ভালো সেগুলো প্রথমে দেবে এবং পর্যায়ক্রমে কম পারা প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে। তবেই পরীক্ষক তোমার সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবে এবং নম্বর বেশি দেবে। * যেসব প্রশ্নে চিত্র বা তথ্যচিত্র বা মানচিত্র দেওয়া যায়, সেসব প্রশ্ন বেশি দিতে চেষ্টা করবে। যেসব প্রশ্নে কেবল তত্ত্বীয় দিক থাকে সেসব প্রশ্ন না দেওয়ার চেষ্টা করবে।
পরিশেষে তোমাদের সবার সাফল্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
Collected From Jugantor