একে ১২ দিয়ে ভাগ করলে আপনার মাসিক আয় আসবে ৬৫০০০ টাকা। এর ৪০% বাড়িয়ে বেতন চাইতে হবে। অর্থাৎ বেতন চাইবেন ৬৫ হাজার টাকার ৪০ শতাংশ বেশি, অর্থাৎ, ৯১ হাজার টাকা। আর ৩০% বেতন না বাড়লে জয়েন করবেন না। অর্থাৎ ৮৪৫০০টাকা বেতন না হলে ৬০ হাজার টাকার একজন কর্মীর স্থায়ী জব ছাড়ার কোন দরকার নেই।
যেহেতু আপনি ৬ বছর কাজ করছেন, কাজেই আপনাকে ৬ মাস কাজ করে বাড়তি কিচ্ছু প্রমাণ করতে হবে না। দুই, কোম্পানির বেচা বিক্রি, প্রোডাকশন সব কিছু কেবল আপনার উপরেই নির্ভর করে না। এর মানে এই না যে আপনি কাজ খারাপ করেন বা কম করেন। এছাড়াও জয়েনের পর কবে থেকে ঈদ বোনাস পাবেন (কোন কোন কোম্পানি বলতে পারে, আমরা জব পার্মানেন্ট হওয়ার এক বছর পর বোনাস দেই, এর মানে আপনি আগামী দেড় বছর বোনাস পাবেন না। এরকম নিয়মের কোন ভিত্তি নেই, এটা একটা কূটকৌশল মাত্র), কী রকম পারফর্ম করলে কী রকম সুযোগ-সুবিধা পাবেন, আসা-যাওয়া, থাকা, খাওয়া, নাস্তা ইত্যাদি কোনটা কোম্পানি দিবে আর কোনটা কোম্পানি দিবে না, তা আলোচনা করে নিবেন।
প্রশ্নঃ পে স্লিপ দেখতে চাইলে কী করবো?
উত্তরঃ প্রথমত, পে স্লিপ দেখতে চাওয়া অবৈধ। সেক্ষেত্রে আপনিও কিন্তু অধিকার রাখেন কোম্পানি ট্যাক্স দেয় কি না, লাইসেন্স আছে কি না, এগুলো দেখতে চাওয়ার আবদার করতে পারেন। কিন্তু তারা আপনাকে দেখাবে না। তাহলে আপনার কোম্পানির পে স্লিপ তাদের দেখাতে হবে কেন? আর সমমনা ইন্ডাস্ট্রিতে কেমন বেতন কাঠামো, কে ভালো করছে, কে কেমন বেতন পায়, এগুলো খোঁজ খবর রাখাও এইচ আরের কাজ। তার যদি আপনার কথা বিশ্বাস নাই হয়, তাহলে সে খবর নিয়ে জানুক। আপনি পে স্লিপ দেখাবেন না। আর আপনার বর্তমান কোম্পানির বেতন কত, এটা আপনার ইন্টারভিউর কোন প্রশ্ন হতেই পারে না। এটা জানার কোন প্রয়োজন তাদের নেই। আপনি কি কাজ জানেন, এই কোম্পানির কী কী আয় উন্নতী করবেন, সেটা নিয়েই শুধু আলোচনা হবে।
প্রশ্নঃ সার্টিফিকেটের মেইন কপি রেখে দিলে কী করবো?
উত্তরঃ থানায় গিয়ে ওই এইচ আরের নামে জিডি করে দিবেন।
প্রশ্নঃ এগ্রিমেন্টে সই করতে বললে কী করবো?
উত্তরঃ এগ্রিমেন্ট বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অবৈধ। এখন যে কোম্পানি শুরুতেই একটা অবৈধ কাজে আপনাকে প্ররোচিত করবে, সে যে পরে আপনাকে দিয়ে আর কোন অবৈধ কাজ করাবে না, তার বৈধতা কী? আসলে, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ভিত দুর্বল থাকে এবং তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছায় কাজ করাতে পারে না। ফলে তাদের আশংকা থাকে কর্মীরা অন্য প্রতিষ্ঠানে অধিক সুযোগ সুবিধা পেয়ে চলে যাবে। এ ধরণের যাওয়া রোধ করতে প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে কর্মীদের জিম্মি করে রাখার চেষ্টা করে।
এ ধরনের চুক্তি আইন অনুসারে অবৈধ, কাজেই এর বিপরীতে কোনো আইনি লড়াইয়ে কোনদিন কোম্পানি জয়ী হতে পারবে না। বাংলাদেশের সংবিধানের কথা বলছি, ৩৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে দু’টি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ব্যতিত সকল প্রকার জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধ; এবং এই বিধান কোনো ভাবে লংঘিত হইলে তাহা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।
এখন যদি খুব জবরদস্তি করে এগ্রিমেন্টে সইয়ের জন্যে, তাহলে এগ্রিমেন্ট সই করেই জব করুন। অন্য কোথাও জব হলে সময়মতো নোটিশ দিন। কোম্পানি ঝামেলা করলে আইনের আশ্রয় নিন। অনেক এনজিও বিনামূল্যে এসব ব্যাপারে সাপোর্ট দেয়। কোম্পানিকে উকিল নোটিশ দিলেই কোম্পানি রিলিজ লেটার দিয়ে দিবে। তবে কোম্পানিতে আপনার অবস্থানকালে আপনি যদি কোন অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত থাকেন, তার জন্য কোম্পানি যে কোন ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারে।
নিয়াজ আহমেদ
সিইও, কর্পোরেট আস্ক।
collection from 10minuteschool